সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:২৫ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক: অবৈধভাবে পদোন্নতী পাওয়া বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন কর্মকর্তা স্বপদে যোগদান করতে গিয়ে শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের রোশানলে পড়েছেন। এসময় শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসের রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দেয়ার হুমকিও দেন। এর ফলে নতুন পদে যোগদানে ব্যর্থ হয়েছেন তারা। গতকাল রোববার দুপুর আড়াইটা থেকে ৩টার মধ্যে সদর উপজেলার কর্ণকাঠীতে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এই ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন দপ্তরে কর্মরত তিন কর্মকর্তা মুর্শিদ আবেদীন, হুমায়ুন কবির ও সুব্রত কুমার বাহাদুর রেজিষ্ট্রার সহ তিনটি পদে পদোন্নতী পেয়েছেন দাবী করে যোগদান করতে রেজিষ্ট্রারের কার্যালয়ে যান। বিষয়টি জানতে পেরে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী, অফিসার এ্যাসোসিয়েশন ও তৃতীয় শ্রেণি কল্যান পরিষদের নেতৃবৃন্দ ক্যাম্পাসের একাডেমিক ভবনের নীচ তলায় অবস্থান নেন। এসময় তারা ওই তিন কর্মকর্তার পদোন্নতী অবৈধ দাবী করে তাদের নতুন পদে যোগদানে বাধা প্রদান করেন। এ নিয়ে ক্যাম্পাসে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা ও শিক্ষার্থীরা জানান, ভিসি প্রফেসর এসএম ইমামুল হক এর ছুটি মঞ্জুর হয়েছে গত ১১ এপ্রিল থেকে। তার আগে ৯ এপ্রিল সিন্ডিকেট কমিটির সভা হয়। ভিসি’র ছুটিতে যাবার পরে আর কোন সভা হয়নি। কিন্তু ওই তিনজন কর্মকর্তা ১৮ এপ্রিল পদোন্নতী পেয়েছে বলে দাবী করেছেন।
এর মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিকল্পনা ও উন্নয়ন দপ্তরের উপ-পরিচালক মো. হুমায়ন কবির চলতি দায়িত্বে পরিচালক, অপর একটি চিঠিতে তাকে ভারপ্রাপ্ত রেজিষ্ট্রার হিসেবে পদোন্নতী প্রদান করা হয়। তাছাড়া অর্থ ও হিসাব বিভাগের উপ-পরিচালক সুব্রত কুমার বাহাদুর চলতি দায়িত্বে পরিচালক এবং নির্বাহী প্রকৌশলী মুর্শেদ আবেদীন চলতি দায়িত্বে ডেপুটি চীফ প্রকৌশলী পদে দায়িত্ব গ্রহনের চেষ্টা করে।
শিক্ষার্থীরা বলেন, যারা পদোন্নতী পেয়েছেন বলে দাবী করেছেন তারা ভিসি বিরোধী আন্দোলনে ছিলেন না। তারা ভিসি’র দালালি করেছে। যে কারনে দুর্নীতিবাজ ভিসি এসএম ইমামুল হক তাদের অবৈধভাবে পূর্বের তারিখ দেখিয়ে পদোন্নতী প্রদান করেছে। যা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক এবং অন্যায়। আর তাই শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তারা তাদের বাধা প্রদান করেছে।
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি আরিফুর রহমান জানান, নিয়ম অনুযায়ী পদোন্নতী প্রদানের ক্ষেত্রে পদোন্নতী বোর্ডের সিদ্ধান্ত এবং পরবর্তীতে সিন্ডিকেটের সভার মাধ্যমে পদোন্নতীর বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। কিন্তু যে তিনজন পদোন্নতী পেয়েছেন বলে দাবী করছেন তাদের পদোন্নতীর ক্ষেত্রে সেসব নিয়ম মানা হয়নি। এজন্যই শিক্ষার্থীরা তাদের নতুন পদে যোগদানে বাধা দিয়েছে।
এদিকে ওই তিন কর্মকর্তার অবৈধভাবে পদোন্নতীর বিষয়টি নিয়ে বিকাল ৩টায় তাৎক্ষনিকভাবে পৃথক জরুরী সভা করেন বিশ্ববিদ্যালয় অফিসার্স এ্যাসোসিয়েশন ও তৃতীয় শ্রেণি কল্যান পরিষদ। ওই সভায় তারা দাবী করেন ছুটিতে থাকা ভিসি তার কু-কর্মের প্রমান লোপাট করতেই অবৈধভাবে রেজিস্ট্রার সহ বিভিন্ন পদে তার অনুগত্যদের পদোন্নতী দিয়েছেন। তাই সাবেক ভিসি’র অবৈধ পদোন্নতীর সিদ্ধান্তকে অবৈধ দাবী করে তা প্রত্যাক্ষ্যানের ঘোষনা করেন। পাশাপাশি অবৈধভাবে নিয়োগ পাওয়া কর্মকর্তারা পরবর্তীতে যোগদানের চেষ্টা করলে রেজিষ্ট্রার কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দেয়ার হুশিয়ারীও দিয়েছে তারা।
Leave a Reply